দেশ বিদেশ, পথে-ঘাটে, লেখনী, প্রবাসীর চিঠি

Tuesday 15 September 2009

লেখনী ... প্রসূনের প্রতি

প্রসূন...

কলকাতা থেকে জার্মানীতে ফিরেছি ক'টা দিন আগে। মেয়ে নাটাশা আর ওর বন্ধু রথিন-এর সাথে পরিচয় হ'য়েছে তোমার ... তোমার কথা বলতে ওরা উচ্ছ্বসিত। আরে না, না আমি ওদেরকে বিন্দুমাত্র প্রভাবিত করিনি। লোকদেখানো আভিজাত্য তোমার নেই ... তোমার অকৃত্রিম আন্তরিকতা, সাহজিকতা ওদেরকে মুগ্ধ করেছে।

জানোই-তো ভারতের মধ্য-সম্প্রদায়ে পরিবারে পরিবারে চলছে এখন কৃত্রিম আভিজাত্যের রঙ্গমঞ্চ-প্রদর্শন প্রতিযোগিতা। একটুকু সুযোগ মিললেই হ’ল আর কি,... সুরু হয় তখন এদের সু-নিপুন রঙ্গ; হ্যাঁ ঠিক কথা, কৃপণতা নেই এদের ন্যাকামীর পরিবেশনে। সে তো অন্নপূ র্ণার ভান্ডার, ডালিটা যে সব সময়েই ভরা থাকে কৃত্রিমতায়। সার্থকতার আপন গুনগানের ফুলঝুরি অনির্বান।

বিত্তবান ধনীশ্রেনীর কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, মথ্যসম্প্রদায়ের এই অংশ করে ধনতন্ত্রের তাঁবেদারী... তথাকথিত সভ্যতা-সংস্কৃতির বড়াই করতে শতমুখ কিন্তু জড়তা আসে এসব সাহেব-সাহেবাদের সাধারন আর খেটেখাওয়া নিম্ন-পারিশ্রমিকের মানুষদেরকে একটুকু মর্য্যাদা দিতে, এদের দম্ভের প্রাসাদ ভেঙ্গে পরে এতে।

কি সে সভ্যতা যেখানে সমাজের এক বৃহত্‍ অংশকে ছোট করে দেখা হয়, আজও আখ্যা দেওয়া হয় “ছোট-লোক”, তুই-তোকারী ছেড়ে ওদেরকে আপনি বলে কথা বলতে পাষানসম হ’য়ে ওঠে সাহেব-বিবীদের জিওহ্বা, মানবিকতার নেই এক ফুটো-পয়সা মূল্য!

মাঝে-সাঝে আমাদের ভারতে যাওয়া হয়, সবাইকার সাথে দেখা করার ইচ্ছেটা অপরিপূর্ণই থাকে প্রতিবার।
কলকাতা যাওয়ার আকর্ষন তো রয়েছে কিন্তু ব্যাপারটা আমার কাছে কিছুটা মর্মান্তিকও বটে। ওই শহরে আসবার জন্যে ধর্-ফর করে এখনও মনটা আমার ...
আর সেথায় পৌঁছুবার পর ... অবস্থা হয় আপন ভিটে-বাড়ী থেকে উত্‍খাত হওয়া উদ্বাস্তু সামিল।

আবার দৃষ্টিগোচর হয় কৃত্রিমতা আর পদদলিত মানবকিতা। ... এটা শুধু কলকাতায় নয়... চলছে গোটা দেশ ধরেই। একথা তো তোমারও অজানা নয় - তবুও লিখছি।

শুভেচ্ছান্তে

প্রবাসী

No comments:

Post a Comment